‘অর্থশাস্ত্র পরিচয়’ মূলতঃ একটি পাঠ্যবই, তবে কেবলমাত্র অর্থনীতির ছাত্রদের জন্য লেখা নয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ পাঠ্যপুস্তকের একটি বড় দুর্বলতা হলো ছাত্রদের সহজে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করার লক্ষ্য নিয়ে সেগুলো রচিত হয়, অর্থশাস্ত্র পরিচয় সেদিক থেকে ব্যতিক্রমী। অর্থশাস্ত্রের সাথে পরিচিত হতে আগ্রহী যে কারো জন্য এটি নির্ভরযোগ্য প্রবেশিকা গ্রন্থের অভাব মেটাবে।
‘অর্থশাস্ত্র পরিচয়’ রচনাকালে লেখকের মূল্য লক্ষ ছিল বিষয়টিতে সম্যক ধারণা অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেনে বাস্তব জীবনের সাথে এই শাস্ত্রটির সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে পারে। এভাবে লেখক বইটিতে অর্থনীতির জটিল ও গূঢ় প্রশ্নগুলোকে এড়িয়ে না গিয়ে, অর্থশাস্ত্রের পরিধি আর অর্থনীতিবিদদের দায়কে সুবিধাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত করেছেন।
অর্থনীতির পাঠ্যসূচিগুলি প্রায়ই এমনভাবে রচিত হয়ে থাকে যে, শিক্ষক আর শিক্ষার্থী উভয়েই একচক্ষু দৃষ্টিতে বিশ্বব্যাংকের ‘উন্নয়ন ব্যবস্থাপত্রের’ কাছে প্রশ্নহীন আত্মসমর্পণ করে, উদ্ধৃত্তমূল্যের রহস্য তাদের কাছে চিরগোপনই থেকে যায়, মজুরির বৃদ্ধিতে সাথে সমাজের সার্বিক বিকাশের কোন সম্পর্কই স্থাপন করতে পারে না সে। ফলে শাস্ত্র হিসেবে অর্থনীতি পর্যবসিত হয় স্রেফ লাভ করে লোকসানের সরল এবং গৎ বাঁধা বুলিতে।
‘অর্থশাস্ত্র পরিচয়’ সেই বিবেচনায় সম্পূর্ণ অন্য ধরনের একটি পাঠ্যপুস্তক, পাঠককে তা প্রশ্ন করতে শেখাবে; আর সকর পাঠ্যপুস্তকেরই আদতে তাই হবার কথা ছিল