‘সামনে সমুদ্র নীল’ কাহিনীতে কিরীটী যেন হত্যাকারী ও প্রেমিকের মাঝখানে জীবনের আতঙ্কময় রহস্য দেখছে, সে সরিৎশেখর ও অনুরাধার মাঝখানের ঘরে। অনুরাধা বাস করেছে। তার হত্যাকারীকে নিয়ে। প্রেমিক সরিশেখরের হৃদয় হত্যাময় প্রেমের উজ্জ্বলতায় ধাবিত কিরীটীর ঘর পেরিয়ে, আর হত্যাকে বুকে নিয়ে সরিতের কাছে মুক্তি চায় তার প্রেমের পাত্রী কিরীটীর ঘর পেরিয়ে। এই সিচুয়েশনই আরও রহস্যময় ও জটিল হয়েছে কিরীটীর ঘরে পূর্বে নিহত জীমূতবাহনের ভয়ংকর অনুষঙ্গ, এর আবহাওয়ার মধ্যে হত্যা ও পাপ, তাকে প্রত্যক্ষ করে তুলেছে ছদ্মবেশী চন্দ্রকান্ত ঘাই, ক্ষিতীন্দ্র-রূপে যার মৃতদেহ তারই স্ত্রী সনাক্ত করেছিল। ক্ষিতীন্দ্রের এ জগতে বেঁচে থাকাটাই যেন অপরাধ, এই অপরাধ থেকে মুক্তির জন্যেই তার মৃত্যু অনিবার্য—এবং অপরিহার্য নিয়তি। কাহিনীর শেষে সলিল দত্ত মজুমদারের—যে তিনটি হত্যার জন্যে দায়ী—হাে হাে করে হাসি কি সাম্প্রতিক যুগের ও জীবনের প্রতি তুচ্ছতার প্রতীক, তার নিজের জীবনই হাসির মত তুচ্ছ? ‘মানসী তুমি’ কাহিনীর সিচুয়েশন আরও গাঢ়তর ; নাটকীয় অপ্রত্যাশিত কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। মানসীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের অপূর্ব মহীয়সী রূপ প্রথমে শরদিন্দুর কাছে ধরা দিয়েছে; সেই মানসীরই যখন বিবাহ হয়েছে শরদিন্দুর সঙ্গে, সুকুমারের সঙ্গে একই বাড়িতে বাস করছে, স্বামীর সন্দেহের ও ঈর্ষার জ্বালায় নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করে তুলেছে, তখন তার চেহারা অন্য রকম। সামাজিক সংস্কার ও প্রেম ; দুই ভাই, একজন স্বামী, অন্যজন প্রেমিক ; স্বামী ঐশ্বর্যশালী ও বিত্তবান, প্রেমিক পরাশ্রয়ী প্রেমভীরু দুর্বল ; এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে মানসী জর্জরিত। এই নাটকীয় সিচুয়েশান থেকেই সুকুমারের প্রেম প্রতিহিংসায় রূপান্তরিত হয়েছে; চোখের সামনে সে দেখতে পারে না তারই প্রেমিকার দেহ ভােগ